বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০২:৫১ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরণ (ভারতীয় ভেরিয়েন্ট) ছড়িয়ে পড়ার আশংকা সত্তে¡ও জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার বিভিন্ন স্পট দিয়ে চোরাই পথে আসছে ভারতীয় গবাদিপশু। চোরাকারবারীরা বিশেষ করে বড়লেখার বোবারথল ও জুড়ীর ফুলতলা সীমান্তকে ভারতীয় মহিষ পাচারের ট্রানজিট রোড হিসেবে ব্যবহার করছে। বিজিবি ক্যাম্পের পাশ দিয়ে প্রকাশ্যে সদর রাস্তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে চোরাই পথে আসা ভারতীয় গরু-মহিষ।
জানা গেছে, যখন দেশে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভেরিয়েন্ট প্রবেশের আতঙ্ক বাড়ছে ঠিক তখন জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু-মহিষ পাচার করছে চোরাকারবারিরা। চোরাকারবারীরা রাতের আঁধারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সদস্যদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে এসব ভারতীয় গবাদিপশু পাচার করছে বলে অভিযোগ সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষদের। ফলে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মৌলভীবাজারে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বড়লেখা ও জুড়ীর গবাদিপশুর হাটের ইজারাদারের যোগসাজসে পাচারকারীরা ভুয়া রশিদ তৈরী করে প্রকাশ্যে সদর রাস্তা দিয়ে ট্রাক-পিকআপে দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে এসব ভারতীয় গরু-মহিষ পাচার করছে। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় পাচারকারীরা বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে এদেশিয় পাচারকারীদের নিকট ভারতীয় গরু-মহিষ বুঝিয়ে দিয়ে ফিরে যায়। অনেক সময় এসব ভারতীয়রা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করে। সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের অভিযোগ গোপন আতাতের কারণে ভারতীয় গবাদিপশু পাচারকাজ বিজিবি ও পুলিশের কাছে অনেকটাই অপেন-সিক্রেট। আর গবাদিপশুর আড়ালে মাদকের বড়বড় চালানও দেশে ঢুকছে।
সুত্র জানায়, কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা মৌলভীবাজারে আসছেন ভারতীয় চোরাই গরু-মহিষ কিনতে। অপরদিকে স্থানীয় চোরাকারাবরীদের সাথে মিশছে ভারতীয় চোরাকারীরা। এতে পাচারকারীদের মাধ্যমে ভারত থেকে মৌলভীবাজার জেলার সীমান্ত এলাকাগুলোতে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে ভারতীয় ভেরিয়েন্টের করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার। তবে করোনার বিস্তার রোধে জেলার সীমান্তগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে এমন দাবি বিজিবি’র। যাতে ভারত থেকে করোনাভাইরাসের জীবাণু বাংলাদেশে আসতে না পারে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ, থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে বাজার মনিটরিং বলে জানা গেছে।
শ্রীমঙ্গল বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুবুল ইসলামের দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ‘র সাথে মোবাইল ফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, বিজিবি সারা বছরই মাদক, গরু-মহিষ পাচার রোধসহ সব ধরনের অবৈধ প্রবেশ বন্ধে কাজ করে আসছে। ইতোমধ্যে সীমান্তে করোনা বিষয়ক প্রচার করাসহ সীমান্তবাসীদের জানানো হয়েছে, যে কোনো রকম অনুপ্রবেশ লক্ষ্য করলেই তারা যেন বিষয়টি আমাদেরকে দ্রæত অবহিত করেন। এছাড়াও অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে। আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে ও ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সম্পুর্নরূপে ভারতীয় নাগরিকসহ সবধরণের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ২/১ টি এলাকা দিয়ে গোপনে গরু-মহিষ বা কিছু প্রবেশ করার তথ্য পেলে বিজিবি তাৎক্ষনিক আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা মীর নাহিদ আহসান দৈনিক মৌমাছি কন্ঠকে বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে প্রথমে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুসহ কোন ধরনের পন্য আসা বন্ধ করার বিষয়ে সকল রকমের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। এছাড়া গত রোববার বিজিবির সাথে বৈঠকে ও এনিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা কঠিনভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছি গরুসহ কোন ধরনে কিছু বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া যাবেনা।
এব্যাপারে জানতে বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের (বিয়ানীবাজার) অধিনায়ক লে. কর্ণেল শাহ আলম সিদ্দিকীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। রিং বাজলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।